শিরোনাম
বিশেষ প্রতিনিধি | ১৪:২৬, এপ্রিল ২৬, ২০২০ | 4373
মীরসরাইয়ের করেরহাট ইউনিয়নের অলিনগর গ্রামের প্রবাসীর গৃহবধু কুলসুমা আক্তার মুন্নী হত্যার ঘটনা তার শশুর বাড়ীর লোকজন অপমৃত্যু বলে ধামাচাপা দিতে তৎপর বলে অভিযোগ করেছে মুন্নীর পরিবার।মামলার বাদী মুন্নীর বড় ভাই ফিরোজ আহাম্মদ মুন্নী হত্যার ১ ঘন্টা পর অর্থাৎ০৫/৪/২০২০ ইং তারিখ সন্ধ্যা আনুমানিক ৮--৩০ ঘটিকায় থানায় মামলা করতে গেলেও বিভিন্ন টালবাহানা করে মামলা নেয় নাই। বরঞ্চ পুলিশের পক্ষ থেকে লিখিত একটি অপমৃত্যু মামলায় বাদীকে স্বাক্ষর করতে বলে। উক্ত কাগজে স্বাক্ষর না করায় ঐদিন কোন মামলা হয় নাই। পরদিন ৬/৪/২০২০ ইং তারিখে বাদীর লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহন করেন। মামলা নং-৭, তারিখ ০৬/৪/২০২০। ধারা ৩০৬ দ: বি:। আসামী মুন্নীর স্বামী ১। মো: আকতার হোসেন- প্রবাসী, মুন্নীর শশুড় ২। মো:নুরুল আলম ৩। শাশুড়ি আনোয়ারা বেগম, ৪।মুন্নীর ভাশুর ইমাম হোসেন প্রকাশ মাসুদ ৫।মুন্নীর জা ফারহানা আক্তার ও ৬। মুন্নীর মেজ জা সুমি আক্তার। সর্ব সাং পশ্চিম অলিনগর,(মোহাম্মদ সওদাগর বাড়ী) ঘোড়ামারা থানা-জোরারগন্জ,জেলা-চট্টগ্রাম। মামলার বাদী ফিরোজ আহাম্মদ মুন্নী হত্যার অভিযোগের তদন্তে অগ্রগতি হতাশাজনক বলে গনমাধ্যম কর্মীদের কাছে অভিযোগ করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা মৃত্যুর ৪ দিন পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। ততক্ষনে আসামীগন লা পাত্তা। জানা যায় আসামীগন সবাই আশপাশের নিজ নিজ আত্মীয় বাড়ীতেই অবস্হান করছে এবং ঘটনার গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে। অথচ আসামীদের গ্রেফতারে পুলিশের কোন তৎপড়তা নাই। বাদী ফিরোজ জানান বিয়ের পর থেকেই মুন্নীর উপর শশুড় শাশুড়ি, বড় জা মেজ জা ও তার স্বামী ছোট খাট বিষয় নিয়া মুন্নিকে নির্মম ভাবে নির্যাতন করে আসছিল। একমাত্র সন্তানের দিকে তানিয়ে মুন্নী এসকল নির্যাতন সহ্য করে আসছিল। ঘটনার দিনও ১ ঘন্টা আগে মুন্নী বাবার বাড়ী থেকে আসছিল। এ সংক্রান্তে তর্কাতর্কি থেকে ঝগড়ার এক পর্যায়ে তারা বালিশ চাপা দিয়ে মুন্নিকে মেরে ফেলে এবং আত্মহত্যা বলে চালানোর জন্য মুন্নীর মৃতদেহ সিলিং ফ্যানের সাথে ওড়না দিয়া ঝুলিয়ে রাখে। এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন মুন্নীর একমাত্র সাড়ে তিন বছরের সন্তান। বাদী আরো বলেন মুন্নীর স্বামী প্রবাসে থাকাকালীন মুন্নীর চাইতে স্বামীর ভাবি,বড় ভাই ও মা বাবার সাথেই বেশী কথা বলত এবং এসকল কারনে মুন্নীর স্বামী মুন্নিকে প্রায়ই মোবাইলে মানসিক নির্যাতন করত। মাসখানেক আগে ২য় বিবাহ করবে বলে মুন্নিকে ধমক দেয়। শশড়ালয়ের সবাইর নির্যাতনের কথা মুন্নীর স্বামীকে জানাইলে মুন্নীর স্বামী মুন্নিকে বলে সহ্য করতে না পারলে বাপের বাড়ী চলে যাও। এই হত্যাকান্ডে মুন্নীর স্বামীর প্ররোচনা রয়েছে বলিয়া বাদী ফিরোজ দাবী করেন। তিনি বলেন,আমার বোনের রুমের মধ্যে কোন চেয়ার বা টুল না থাকা সত্বেও খাটের উপরে ফ্যানের অল্প দুরত্ব মাত্র। এমন অবস্হায় ফ্যানের একটি ডানায় ভর করে আত্মহত্যার ঘটনাটি
সম্পুর্ন সাজানো নাটক।একমাত্র নিরপেক্ষ তদন্ত ও পোষ্টমর্টেম রিপোর্টেই মৃত্যু রহস্য বের করে আনতে পারবে।অন্যথায় বিখ্যাত বিখ্যাত হত্যা মামলার মত এই মামলাটিও আইনের যাতাকলে একসময় চাপা পড়ে যাবে।
মুন্নীর মামা স্বাস্হ্যকর্মী নুরুল আলম বলেন, ভাগ্নির ঘরের এক স্কুল পড়ুয়া কিশোর নুরউদ্দিন (১২) ও বলেছে,আমি দেখেছি মুন্নী মামী যখন ফ্যানের সাথে ঝুলছিল, তখন উনার হাটু খাটে ভাজ করা। ঘরের দরজার কোন হুক ভাঙ্গা ছিলনা। পরে পুলিশকে দেখানোর জন্য আসামীপক্ষ ভিতরের হুকটি ভেঙ্গে ফেলেছে।তাছাড়া এমন একটি মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটলেও মাত্র ৪ মিনিটের দুরত্বে মুন্নীর বাবার বাড়ীতে খবরটি না দিয়া আগে অনেক দুরত্বে থানায় পুলিশকে খবর দিয়াছে।পরিবারেন লোকজন মুন্নিকে নিয়া যখন উপজেলা স্বাস্হ্য কমপ্লেক্সে নিয়া গেছে,তখন দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা: অমিত দে মুন্নিকে মৃত ঘোষনা করেন।প্রকৃত ঘটনা পোষ্ট মর্টেম রিপোর্টেই প্রমানিত হবে বলিয়া তিনি জানান। উক্ত বিষয়ে ঘটনার তদন্ত কর্মকর্তা জোরারগন্জ থানার এস আই নিবাস কুমার ভট্রাচার্য্য বলেন,আমি ৯ ই এপ্রিল ঘটনার তদন্তে গিয়েছিলাম।অভিযোগকারীগনের নানা আলামত সংগ্রহ করেছি।পোষ্ট মর্টেম রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছি।মামলার আসামীরা আশেপাশের আত্বীয় বাড়ীতে আত্মগোপন করে আছেন।তাদের গেফতারে কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন কিনা জিঙ্গাসা করলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেন নাই।এস,আই, নিবাস কুমার ভট্রাচার্য্য যেদিন ০৯/৪/২০২০ ইং তারিখে আসামীর বাড়ীতে গেলেন,সেদিন উক্ত বাসায় একজন মহিলা(মুন্নীর ছোট জা)উপস্হিত ছিলেন,তাহাকে কিছু জিঙ্গাসাবাদ করেন নাই এবং অন্যান্য আসামীরা কোথায় আছেন,তাহাও জিঙ্গাসা করলেন না কেন? তদন্ত কর্মকর্তা বলেন,করোনা ভাইরাসের কারনে আতংকিত থাকায় উক্ত মহিলাকে কোন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি।তাছাড়া উক্ত মহিলাকে মামলায় আসামী করা হয় নাই। জোরারগন্জ থানার ওসি মো: মফিজউদ্দিন ভূইয়া বলেন,মুন্নীর পরিবারের সকল অভিযোগ তদন্ত করা হবে।পোষ্টমর্টেম রিপোর্টটি হাতে আসুক।গ্রামের সচেতন মহল,মুন্নীর পরিবার এবং গনমাধ্যম কর্মীদের সবাইর নজর এখন একমাত্র পোষ্টমর্টেম রিপোর্টের দিকে।গত ০৬/৪/২০২০ ইং তারিখে ডা: জেসমিন আক্তারের তত্বাবধানে চট্রগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগে পোষ্টমর্টেম হয়।
তদন্ত কর্মকর্তা এস,আই,নিবাস এর মোবাইল নং-০১৭১৮৭৭৯৫৪৩।
Developed By Muktodhara Technology Limited